শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

হিট স্ট্রোক হলে কী করবেন?

সেরাকণ্ঠ ডট কম :
মে ২৭, ২০১৭

প্রচ- গরমে রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। আর তীব্র এই গরমে সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে নানা রকম অসুখ-বিসুখে। তবে কয়েক দিনে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। ছোট-বড় নানা বয়সের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে হিট স্ট্রোকে।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তারা বলছেন, অতিরিক্ত গরমে একটি মারাত্মক স্বাস্থ্যগত সমস্যার নাম হিট স্ট্রোক। হিট স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত শীতল কোনো স্থানে যেতে হবে। যদি সম্ভব হয়, ফ্যান বা এসি ছেড়ে দিতে হবে। আর সম্ভব হলে গোসল করতে হবে। যদি অবস্থার উন্নতি না হয় তাহলে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে।
বিষয়টি সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. সুনীল কুমার বিশ্বাস বলেন, চিকিৎসা শাস্ত্র অনুযায়ী, প্রচ- গরম আবহাওয়ায় শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে তাকে হিট স্ট্রোক বলে। প্রচ- গরম ও আর্দ্র পরিবেশে বেশি সময় অবস্থান বা পরিশ্রম করলে তাপ নিয়ন্ত্রণ আর সম্ভব হয় না। এতে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বিপদসীমা ছাড়িয়ে যায় এবং হিট স্ট্রোক দেখা দেয়।
হিট স্ট্রোকের লক্ষণ কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে হিট স্ট্রোকের আগে প্রথমে শরীরের মাংসপেশিতে ব্যথা হয়, শরীর দুর্বল লাগে এবং প্রচ- পিপাসা পায়। এর পরের ধাপে দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, মাথাব্যথা, ঝিমঝিম করা, বমিভাব, অসংলগ্ন আচরণ ইত্যাদি দেখা দেয়। এই দুই ক্ষেত্রেই শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ঠিক থাকে এবং শরীর অত্যন্ত ঘামতে থাকে। এ অবস্থায় দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে হিট স্ট্রোক হতে পারে।
হিট স্ট্রোক হলে করণীয় কী জানতে চাইলে ড. সুনীল কুমার বলেন, প্রাথমিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ সম্ভব। দ্রুত শীতল কোনো স্থানে চলে যান। যদি সম্ভব হয়, ফ্যান বা এসি ছেড়ে দিন। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে ফেলুন। সম্ভব হলে গোসল করুন।
প্রচুর পানি ও খাবার স্যালাইন পান করুন। চা বা কফি পান করবেন না।
তিনি আরো বলেন, যদি হিট স্ট্রোক হয়েই যায়, তবে রোগীকে অবশ্যই দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে, ঘরে চিকিৎসা করার কোনো সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে রোগীর আশপাশে যারা থাকবেন তাদের করণীয় হলোÑ রোগীকে দ্রুত শীতল স্থানে নিয়ে যান। তার কাপড় খুলে দিন। শরীর পানিতে ভিজিয়ে দিয়ে বাতাস করুন। এভাবে তাপমাত্রা কমাতে থাকুন। সম্ভব হলে কাঁধে, বগলে ও কুচকিতে বরফ দিন। রোগীর জ্ঞান থাকলে তাকে খাবার স্যালাইন দিন। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন। সব সময় খেয়াল রাখবেন হিট স্ট্রোকে অজ্ঞান রোগীর শ্বাসপ্রশ্বাস এবং নাড়ি চলছে কি না। প্রয়োজন হলে কৃত্রিমভাবে নিশ্বাস ও নাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করতে হতে পারে।