ঢাকা বিভাগে সাড়ে তিন হাজার মাদক কারবারি, শিগগিরই গ্রেপ্তার
চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। তাদের তথ্যমতে, শুধু ঢাকাতেই সাড়ে তিন হাজার মাদক কারবারি রয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বলছে, তালিকা ধরে শিগগিরই অভিযান শুরু করবে তারা।
শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো উত্তরের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা বিভাগের প্রধান ও সংস্থাটির অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুর রহমান।
তিনি বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর এর আগেও মাদক কারবারিদের তালিকা তৈরি করেছিল। দুই মাস আগে পূর্বের তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। আমরা ঢাকা বিভাগের মাদক কারবারিদের গ্রেফতারে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছি।
তিনি বলেন, ইতি মধ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের বিভিন্ন অভিযান পরিচালনার জন্য লোকবল ও লজিস্টিক সার্পোট কিছুটা বেড়েছে। আমরা অভিযানের সংখ্যাও বৃদ্ধি করেছি।
সম্প্রতি রাজধানীর গুলশান, ভাটারা, কুড়িল ও রমনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫৬০ গ্রাম আইস ও ১২০০ পিস ইয়াবাসহ পাঁচ মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) দাবি, এটি এখন পর্যন্ত ঢাকায় জব্দ হওয়া আইসের সবচেয়ে বড় চালান। এ সময় দুটি প্রাইভেটকারও জব্দ করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য কোটি টাকা।
তিনি বলেন, মাদকটির প্রতি গ্রামের দামই প্রায় ১০ হাজার ৫০০ টাকা। এই মাদকসেবন ব্যয়বহুল হওয়ায় সচ্ছল পরিবারের ছেলেমেয়েরাই এই মাদকের সঙ্গে জড়িত হয়। এই গ্রেপ্তার পাঁচজনও সচ্ছল পরিবারের। যেমন- জাকারিয়া অস্ট্রেলিয়া থেকে পড়াশোনা করে এসেছে। তারেক আহম্মেদ যুক্তরাজ্য থেকে এসেছে। এছাড়া জসিম উদ্দিন বাড়ি ও গাড়ির মালিক। সবাই অর্থ ও বিত্তশালী।
এরা কেন জড়িয়ে পড়ছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা বলেন, মূলত এরা প্রলোভনে এই অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। আইসের দাম অনেক বেশি হওয়ায় মাদকদ্রব্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা অধিক টাকা আয়ের লোভে প্রলোভন দেখিয়ে এসব কাজে তাদের নিয়ে আসে।
তিনি বলেন, যারা ইয়াবা কারবার করে তারা নতুন করে মিয়ানমার থেকে আইস মাদকের কারবারে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে। এছাড়াও বর্তমানে আইস মাদকে যুক্ত হচ্ছে বিত্তশালীরা। গ্রেফতার আসামীদের সবার অবস্থা ভালো ও তারা বিত্তশালী। তাদের কেউ ইংল্যান্ড থেকে বিবিএ করেছেন, কেউ আবার অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করেছেন। তারাই রাজধানীর অভিজাত এলাকায় করছেন মাদকের কারবার। তারা সেবনের পাশাপাশি ভয়ানক মাদক আইস কারবারের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন।
এসব মাদকের উৎস মিয়ানমার। নাফ নদী পথে গভীর সমুদ্র হয়ে মাদকের এসব চালান দেশে আসছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, ক্রিস্টাল মেথ (আইস) একটি ভয়ঙ্কর মাদক যা ইয়াবার থেকে বহুগুন শক্তিশালী। এই মাদক মানুষের মস্তিস্কের নিউরোনে ব্যপক প্রভাব ফেলে। এটি একটি ক শ্রেণির মাদকদ্রব্য।