রোহিঙ্গারা ফেরত না গেলে দেশে সন্ত্রাসবাদের আশঙ্কা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেছেন, রোহিঙ্গারা ফেরত না গেলে বাংলাদেশে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের আশঙ্কা রয়েছে। সেই সাথে সংকট সমাধানে আসিয়ানের ভূমিকার বিকল্প নেই।
শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ২৭তম আসিয়ান ফোরামের বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি। আসিয়ান রিজিওনাল ফোরামের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ভিয়েতনামের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফাম বিন মিনহ।
ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরাতে মিয়ানমারের সঙ্গে তিনটি চুক্তি সই হয়েছে। মিয়ানমার বলেছে, রোহিঙ্গাদের জন্য সেখানে অনকূল পরিবেশ তৈরি করবে। তবে সেখানে অনুকূল পরিবেশ তৈরি না হওয়ায় একজন রোহিঙ্গাও ফেরত যাননি। রোহিঙ্গারা ফেরত না গেলে উগ্রবাদের ঝুঁকি রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ফেরানোর লক্ষ্যে রাখাইনে আসিয়ান, রাশিয়া, চীন, ভারতসহ অন্য যেকোনো বন্ধু দেশকে পছন্দমতো মিয়ানমার বেসামরিক পর্যবেক্ষক নিয়োগ করতে পারে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ করোনা ভাইরাস মহামারি মোকাবিলা করছে। তবে খুব কম সংখ্যক রোহিঙ্গা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনার টিকা পাওয়া গেলে কোনও ধরনের বৈষম্য ছাড়াই তা বিতরণে জোর দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার মানুষ।
তারা কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়। ৯০ দশকে পালিয়ে আসা আরও ৩ থেকে ৫ লাখ রোহিঙ্গা তো আগে থেকেই ছিল। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি সম্পন্ন হলেও তা কেবলই এক প্রহসন হিসেবে হাজির রয়েছে।
২০১৯ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) মিয়ানমার কর্তৃক জোরপূর্বক রোহিঙ্গাদের বিতাড়ন ও সংশ্লিষ্ট মানবতাবিরোধী অপরাধ নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) ২০২০ সালের জানুয়ারিতে গণহত্যা প্রতিরোধে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপ ঘোষণা করে।
তবে কিছুই মানেনি মিয়ানমার। দেশের ভেতরে সংঘটিত গুরুতর অপরাধ তদন্তের জন্য জাতিসংঘকেও অনুমতি দেয়নি তারা। নিজেরাও সামরিক নৃশংসতার বিরুদ্ধে নির্ভরযোগ্য কোনও তদন্ত চালায়নি।