বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রধানমন্ত্রীকে বিএনপির ধন্যবাদ জানানো প্রয়োজন ছিল : তথ্যমন্ত্রী

সেরাকণ্ঠ ডট কম :
সেপ্টেম্বর ৫, ২০২০
news-image

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দলটির ধন্যবাদ জানানো প্রয়োজন ছিল জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, কিন্তু বাস্তবিক অর্থে বিএনপি ধন্যবাদ জানানোর সংস্কৃতিটা লালন করে না। এজন্য তারা ধন্যবাদ জানাতে ব্যর্থ হয়েছে।

শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) নিজ বাসভবনে টিভিসংশ্লিষ্ট কলাকুশলীদের বিভিন্ন সংগঠনের জোট ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন (এফটিপিও) নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ কথা জানান।

বেগম জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ালেও বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ধন্যবাদ জানানো হয়নি- এ বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নজিরবিহীনভাবে একজন শাস্তিপ্রাপ্ত আসামি (খালেদা জিয়া), যিনি ১০ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তাও এতিমের টাকা আত্মসাতের কারণে দুর্নীতির দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, তাকে নজিরবিহীনভাবে সিআরপিসি ৪০১ ধারার ক্ষমতা বলে তিনি মুক্তি দিয়েছেন। ছয় মাসের জন্য প্রাথমিকভাবে মুক্তি দেয়া হয়েছে, পরে আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে।

তিনি বলেন, এই প্রথম সিআরপিসির ৪০১ ধারায় যে প্রদত্ত ক্ষমতা সেটা প্রধানমন্ত্রী প্রয়োগ করেছেন। এতে বিএনপির ধন্যবাদ জানানো প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে বিএনপি ধন্যবাদ জানানোর সংস্কৃতিটা লালন করে না। এজন্য তারা ধন্যবাদ জানাতে ব্যর্থ হয়েছে।

আমার প্রশ্ন বিএনপির কাছে, বেগম খালেদা জিয়া যদি প্রধানমন্ত্রী থাকতেন, এ পরিস্থিতি যদি উল্টোভাবে ভাবি, বেগম খালেদা জিয়া কি শেখ হাসিনার জন্য এ ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন? আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি করতেন না। কারণ যিনি ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডকে উপহাস করার জন্য হত্যাকারীদের উৎসাহিত করার জন্য নিজের জন্মের তারিখটাই বদলে দিয়ে ১৫ আগস্ট কেক কাটেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী তার দরজায় গিয়ে ১৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পর দরজা খোলেননি, যার জ্ঞাতসারে তার পুত্র ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালায়, শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব কিছু ভুলে এই মহানুভবতা দেখিয়েছেন, এটি নজিরবিহীন।

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা বলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা দেখেছি বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নামে যেভাবে ভোট বানচাল করার চেষ্টা করেছে, ৫০০ ভোটকেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছে। শত শত মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। এমনকি পোলিং অফিসারকে হত্যা করেছে। এই যদি তাদের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নমুনা হয়, প্রকৃতপক্ষে বিএনপি হচ্ছে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি।

এফটিপিও নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের পণ্যের বিজ্ঞাপনে বিদেশি দ্বিতীয় শ্রেণির শিল্পী কলাকুশলীদের দিয়ে বানিয়ে এনে প্রদর্শন করা হয়। এতে বাংলাদেশের শিল্পীরা বঞ্চিত হচ্ছেন, শিল্প বঞ্চিত হচ্ছে। আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা যারা অভিনয় করে যারা বিজ্ঞাপনে মডেল হয়, তারা কিন্তু অনেক স্মার্ট, দেখতে সুন্দর। কিন্তু এরপরও কোনো কোনো বিজ্ঞাপনী সংস্থার সবসময় প্রবণতা থাকে আশপাশের দেশ থেকে এগুলো বানিয়ে আনা। সেটি আমরা বন্ধ করব না কিন্তু এটার ওপর একটি নিয়মনীতি আরোপ করতে হবে। সেই নিয়মনীতি আমরা আরোপ করতে যাচ্ছি।

মুক্তবাজার অর্থনীতিতে যে কাউকে দিয়ে বানাতে পারে, কিন্তু আমাদের দেশের শিল্পী ও শিল্পকে রক্ষার জন্য কেউ যদি বিদেশি শিল্পী দিয়ে বিজ্ঞাপনচিত্র বানায় তবে প্রতি শিল্পীর জন্য সরকারকে কয়েক লাখ টাকা সরকারকে কর দিতে হবে। একই সঙ্গে এ বিজ্ঞাপন যখন টেলিভিশনে প্রদর্শিত হবে, সেই প্রদর্শনের জন্য মিনিট অনুযায়ী বা সেকেন্ড অনুযায়ী একটা ফি সরকারের কাছে জমা দিতে হবে। এটি দিয়ে যারা করতে চাইবে করবে। এটি আমরা খুব সহসাই করতে যাচ্ছি।

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন,শিল্পীদের জন্য শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আছে, সেই কল্যাণ ট্রাস্টের সবাই অ্যাক্সেস করতে পারেন। টেলিভিশন, মঞ্চ, যাত্রার জন্য তো আলাদা শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট করা যাবে না। শিল্পীদের জন্য একটি শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আছে। সেটি পরিচালনার দায়িত্ব হচ্ছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী চলচ্চিত্র শিল্পীদের জন্য চলচ্চিত্র শিল্পী ট্রাস্ট গঠন করেছেন। এই দুটির মধ্যে কীভাবে টেলিভিশন শিল্পীরাও এর থেকে সহায়তা পায় সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। যাতে সব শিল্পীই এখান থেকে সহায়তা পান। চিন্তা-ভাবনা করে আমরা একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হবো ইনশাআল্লাহ।

টিআরপি ব্যবস্থাকে নিয়মনীতির মধ্যে আনতে গিয়ে তিন মাস আগ থেকে তথ্য মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা একটি কমিটি গঠন করেছি। এই কমিটি সুপারিশ করবে কীভাবে বিজ্ঞানসম্মতভাবে বা অন্যান্য দেশে যেভাবে টিআরপি নির্ধারণ করা হয়, সে পদ্ধতিতে আমাদের দেশে কীভাবে টিআরপি নির্ধারণ করা যায়।