রবিবার, ৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মশা মারতেও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ লাগে, এটি খুবই হাস্যকর

সেরাকণ্ঠ ডট কম :
আগস্ট ২, ২০১৯
news-image

ডেঙ্গু পরিস্থিতি ‘মহামারী’ আকার ধারণ করেছে মন্তব্য করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, এ পরিস্থিতিতেও মশা মারতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ লাগে, এটি খুবই হাস্যকর। দায়িত্বশীলতার চূড়ান্ত অভাবের কারণেই দেশের এই চিত্র ধারণ করেছে।

শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বিরাজিত নৈরাজ্যিক পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যা ও ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে এ সম্মেলনের আয়োজেন করে নাগরিক ঐক্য।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা মান্না বলেন, দেশে ডেঙ্গুর বাহক এডিসের ভয়াবহ বিস্তার ঘটেছে। এ কারণে দেশ আজ এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে আছে। দেশের প্রায় সব জেলা এখন ডেঙ্গু কবলিত। অথচও এমন পরিস্থিতিতেও মন্ত্রী-মেয়ররা আজ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার অপেক্ষায় বসে আছেন।

মশা মারার কার্যকর ওষুধ কেনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে নির্দেশ দিতে হয়েছে উল্লেখ করে মান্না বলেন, ‘এ রকম একটি ব্যাপারে যদি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের প্রয়োজন হয়, তা হলে ঢাকার দুই সিটি মেয়র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের পদে থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ঢাকার দুই মেয়রের সমালোচনা করে ডাকসুর সাবেক এ ভিপি বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি যখন চরমে, তখন ঢাকার দুই মেয়র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী কী করছেন তা সবাই দেখছে। তারাসহ দায়িত্বশীলরা মশা মারার ওষুধ আনতে না পারলেও কিন্তু মশা মারার নাটক ঠিকই করে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ঢাকা সিটির দুই মেয়র এখনও পর্যন্ত মশা মারার কার্যকর ওষুধ আমদানি করতে পারেননি। তারা মশা মারার নাটক ঠিকই করছেন।

মান্না বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ে সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং ঢাকার দুই সিটির দুই মেয়র কী বাগাড়ম্বর করছেন। অনর্থক বিরোধী দলের রাজনীতিকে দোষারোপ করছেন। তবে এ কথাও সত্য যে, বিরোধী দলের রাজনীতি আজ অনৈক্যের কানা গলিতে আর আপসকামিতার চোরাবালিতে আটকে গেছে।’

নাগরিক ঐক্যের এই নেতা বলেন, ‘ ডেঙ্গুর সিজন এখনও তিন মাস বাকি। আগামী সেপ্টেম্বরে এটি সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওঠার কথা। আমাদের দেশে যখন ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তার, তখন পশ্চিমবঙ্গে প্রকোপ কমে গিয়ে সামান্য পর্যায়ে আছে। মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ সরকার থাকলে, সেটির ফল কী হতে পারে পশ্চিমবঙ্গ তা দেখিয়েছে। আর মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা না থাকলে, তার ফল কী হয়, সেটির প্রমাণ বাংলাদেশ।’

নির্বাহী বিভাগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, মশা মারার ওষুধ কার্যকর নেই। নির্বাহী বিভাগ গড়িমসি করছে, তাই নতুন ওষুধ আনার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যা মহামারী আকার ধারণ করেছে উল্লেখ করে মান্না বলেন, এর পেছনে সরকারের দায়িত্বহীনতাই দায়ী।

দেশের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে হত্যাকাণ্ডের সমালোচনা করে তিনি বলেন, মানুষকে এখন প্রকাশ্যে কুপিয়ে মারা হচ্ছে। সরকারের প্রশ্রয়ে পুলিশের গাফিলতির জন্যই এমনটি হচ্ছে। পুলিশ বাহিনী দিয়ে বিনাভোটে নির্বাচিত হয়েও সরকার ক্ষমতা দখল করে আছে। বিরোধী দলের ওপর পুলিশ বাহিনী দিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে।

সংসদ ভেঙে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই সরকার বিনাভোটের সরকার। সাধারণ জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে এই সরকার ক্ষমতায় আসেনি। তাই নতুন নির্বাচন আয়োজন করে সব দলের অংশগ্রহণে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। এ ছাড়া দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা এসএম একরাম, সমন্বয়কারী শহিদুল্লাহ কাউসার, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মমিনুল ইসলাম, ডা. জাহেদুর রহমান প্রমুখ।