শনিবার, ১২ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কিডনির ক্ষতি হয় যেসব অভ্যাসে

সেরাকণ্ঠ ডট কম :
ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৯
news-image
শরীরের খুব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর একটি হলো কিডনি। এটি হচ্ছে শরীরের ছাঁকুনি। দেহের নানা বর্জ্য পদার্থ, অব্যবহৃত খাদ্য এবং বাড়তি পানি নিষ্কাশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কিডনি। ফলে আমরা সহজেই সুস্থ থাকি। তবে দেহের সুস্থতার পাশাপাশি কিডনির সুস্থতা রক্ষা করাও অনেক বেশি জরুরি। কিন্তু বেশিরভাগ সময় দেখা যায়, আমরা কিডনির দিকে ঠিকমতো নজর দেই না। এতে করে কিডনির সমস্যা বেড়ে যায়। আর প্রতিবছর এ সমস্যায় অনেক মানুষ মারা যায়। অথচ কিছু অভ্যাস আছে যেগুলো পরিত্যাগ করতে পারলেই কিডনির ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

 

এক্ষেত্রে জেনে নিন কিডনির ক্ষতি করে এমন কিছু অভ্যাসের কথা-

 

# পর্যাপ্ত পানি পান না করা

 

কিডনির প্রধান কাজ হলো শরীর থেকে পরিপাক প্রক্রিয়ার বর্জ্য অপসারণ করা এবং লোহিত রক্ত কণিকার ভারসাম্য রক্ষা করা। কিন্তু পর্যাপ্ত পানি পান না করলে কিডনির রক্তপ্রবাহ কমে যায়। ফলে রক্তে দূষিত রাসায়নিক জমা হতে থাকে। কাজেই সুস্থ থাকতে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত।

 

# অতিরিক্ত লবণ খাওয়া

 

বাড়তি লবণ খাওয়ার কারণেও কিডনির অনেক ক্ষতি হয়। লবণ রক্তচাপ বাড়াতে ভূমিকা রাখে যা কিডনির উপর এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করে। তাই দৈনন্দিন জীবনে পরিমিত লবণ খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

# প্রস্রাব আটকে রাখা

 

দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্রাব আটকে রাখলেও কিডনির অনেক ক্ষতি হয়। এতে কিডনির ওপর অনেক বেশি চাপ পরে এবং কিডনি সাধারণ কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। তাই কিডনি সুস্থ রাখতে বেশি সময় প্রস্রাব ধরে রাখবেন না।

 

# অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়া

 

অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার খেলে মূত্রের সাথে প্রোটিন নির্গত হয় যা কিডনির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। কাজেই কিডনি সুস্থ রাখতে মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি না খাওয়াই ভালো।

 

# ভিটামিন ও মিনারেলের অভাব

 

ভিটামিন বি ৬ ও ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতির কারণে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। কাজেই সুস্থ থাকতে প্রতিদিন প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়ার বিকল্প নেই।

 

# অতিরিক্ত প্রাণিজ প্রোটিন গ্রহণ

 

অতিরিক্ত প্রাণিজ প্রোটিন গ্রহণ করলে কিডনির মেটাবোলিক চাপ বেড়ে যায়। কাজেই যত বেশি প্রোটিন গ্রহণ করবেন কিডনির উপর চাপ তত বেশি বৃদ্ধি পাবে। ফলে কিডনি দ্রুত অকেজো হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা বৃদ্ধি পায়।

 

# ঘুমের অভাব

 

রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমালে কিডনির ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুগুলো সেরে ওঠে। অন্যথায় শরীরের বিশ্রাম হয় না এবং কিডনির ক্ষতি হয়।

 

# অতিরিক্ত কফি পান

 

অতিরিক্ত কফি পান করলে তা রক্তচাপ কিছুটা বাড়িয়ে দেয় এবং কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। তখন খুব দ্রুতই কিডনি অকেজো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। কাজেই সুস্থ থাকতে অতিরিক্ত কফি পান এড়িয়ে চলুন।

 

# পেইন কিলার গ্রহণ

 

কেউ কেউ সামান্য ব্যথাতেই পেইন কিলার খেয়ে থাকেন। এটা ঠিক নয়। ঘন ঘন পেইন কিলার খেলে দ্রুত কিডনি ও লিভার নষ্ট হয়ে যায়।

 

# মদ্যপান

 

অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে কিডনির স্বাভাবিক কার্যকলাপে ব্যাঘাত ঘটে এবং কিডনিতে চাপ সৃষ্টি হয়। সেই সঙ্গে লিভারেরও ক্ষতি হয়। কাজেই কিডনি সুস্থ রাখতে মদ্যপান এড়িয়ে চলার বিকল্প নেই।

 

সাধারণত প্রাত্যহিক জীবনে অনিয়ম করলে এর প্রভাবটা সরাসরি কিডনির উপর পড়ে। কাজেই এ সম্পর্কে আগে থেকেই সচেতন হউন। কিডনির সুস্থতায় উপরোক্ত অভ্যাগগুলো ত্যাগ করার চেষ্টা করুন। তাতে কিডনির পাশাপাশি আপনিও সুস্থ থাকবেন।