টেস্টে দেড় যুগে বাংলাদেশের যত অর্জন
একে একে ১৮টি বসন্ত অতিক্রান্ত হলো। টেস্ট ক্রিকেটাঙ্গনে ১৯ বছরে পা দিল বাংলাদেশ। ঠিক এদিনেই ক্রিকেটের অভিজাত সংষ্করণে অভিষেক ঘটেছিল টাইগারদের। ২০০০ সালের ১০ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের প্রতিপক্ষ ছিল ভারত।
ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম বড় সাফল্য ছিল ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জয়। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। এর বদৌলতে ১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে তারা। ক্রিকেটের বৈশ্বিক আসরে প্রথমবার অংশ নিয়েই চমকে দেয় সবাইকে। বিশ্বমঞ্চে হারান তখনকার সমশক্তি স্কটল্যান্ড এবং পরাশক্তি পাকিস্তানকে।
ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসরে অভূতপূর্ব সাফল্য পাওয়ায় টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগে বাংলাদেশ। দেশের সর্বস্তরের মানুষের সমর্থন ছিল সঙ্গে। ওই সময়ের বিসিবি বস সাবের হোসেন চৌধুরীর হাত ধরে টেস্ট স্ট্যাটাস অর্জন করে টাইগাররা। দিনটি ছিল ২৬ জুন।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০০০ সালের ১০ নভেম্বর প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলে ফেলে বাংলাদেশ। সাদা পোশাকে দেশের প্রথম অধিনায়ক ছিলেন নাঈমুর রহমান দুর্জয়। প্রতিপক্ষ দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি। ম্যাচটির উদ্বোধন ঘোষণা করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এখন পর্যন্ত ১০৯টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ১০ জয়ের বিপরীতে হার ৮৩টি, ড্র ১৬টি। প্রথম টেস্ট জেতে ২০০৫ সালে দেশের মাটিতে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এ দলটির বিপক্ষেই রোববার সিরিজ হার এড়াতে নামবে মাহমুদউল্লাহ বাহিনী।
এর আগে একনজরে দেখে নেব ক্রিকেটের আদি ফরম্যাটে দেড় যুগের পথচলায় বাংলাদেশের যত অর্জন-
১. নিজেদের অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি (১৪৫) হাঁকান আমিনুল ইসলাম বুলবুল। দেড়শ বছরের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে তিনিসহ মাত্র তিনজনের এ কীর্তি আছে। তার আগে অস্ট্রেলিয়ার চার্লস বানারম্যান ও জিম্বাবুয়ের ডেভ হটন এ রেকর্ড গড়েন।
২. টেস্ট অভিষেকে সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ানের রেকর্ডটি এক বাংলাদেশির। ২০০১ সালে টেস্ট অভিষেকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৭ বছর ৬৩ দিন বয়সে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন মোহাম্মদ আশরাফুল। স্পট ফিক্সিংয়ের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফের মূল ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় লিটল মাস্টার।
৩. সবচেয়ে কম বয়সে ১০ উইকেটের রেকর্ডটি এনামুল হক জুনিয়রের। ২০০৫ সালে ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১২ উইকেট শিকারের ম্যাচের শুরুর দিন তার বয়স ছিল ১৮ বছর ৪০ দিন।
৪. অভিষেকে ১০ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটিও এক টাইগারের। ২০১২ সালে খুলনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকে সবশেষে নেমে সেঞ্চুরি (১১৩ রান) হাঁকান আবুল হাসান রাজু।
৫. এক টেস্টে সেঞ্চুরি ও হ্যাটট্রিকের অনন্য রেকর্ড সোহাগ গাজির। ২০১৩ সালে চট্টগ্রামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ইতিহাসের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে এ কীর্তি গড়েন তিনি।
৬. ইতিহাসে এক টেস্টে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট শিকার করা তৃতীয় খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান। ২০১৪ সালে খুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি এবং ম্যাচে ১০ উইকেট নেন তিনি। তার আগে কেবল ইংল্যান্ডের ইয়ান বোথাম ও পাকিস্তানের ইমরান খানের এ কীর্তি ছিল।
৭. টেস্টে টানা ১৩ ইনিংসে ফিফটি করেছেন মুমিনুল হক। তিনি ছাড়া শুধু স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের এ নজির আছে।