সেন্ট মার্টিনকে মিয়ানমারের অংশ দেখানোর চেষ্টায় রাষ্ট্রদূতকে তলব

মিয়ানমারের মানচিত্রে সেইন্ট মার্টিন দ্বীপপুঞ্জকে দেখানোর ঘটনায় দেশটির রাষ্ট্রদূতকে ডেকে তার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
শনিবার দুপুরে ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত লুইন উকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়।
রাষ্ট্রদূত উপস্থিত হলে তাকে প্রতিবাদপত্র ধরিয়ে দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার এডমিরাল খুরশিদ আলম।
রাষ্ট্রদূতকে দুপুর ১টায় মন্ত্রণালয়ে খুরশিদ আলমের কক্ষে ঢুকতে দেখা যায়; তিনি এক ঘণ্টা পর বেরিয়ে আসেন।
বেরিয়ে আসার সময় জিজ্ঞাসায় কিছু বলতে চাননি রাষ্ট্রদূত লুইন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি।
তবে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা বলেন, রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়েছিল।
একজন কর্মকর্তা বলেন, “তাতে তলব করে প্রতিবাদপত্র দেওয়া হয়েছে।”
কী কারণে এই তলব- তার ব্যাখ্যায় এক কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমার সরকারের জনসংখ্যা বিষয়ক বিভাগের ওয়েবসাইট সম্প্রতি তাদের দেশের যে মানচিত্র প্রকাশ করেছে, তাতে সেইন্ট মার্টিন দ্বীপপুঞ্জকে তাদের ভূখণ্ডের অংশ দেখানো হয়ে।
ওই মানচিত্রে মিয়ানমারের মূল ভূখণ্ড এবং বঙ্গোসাগরে বাংলাদেশের অন্তর্গত সেইন্ট মার্টিন দ্বীপকে একই রঙে চিহ্নিত করা হয়। অন্যদিকে বাংলাদেশের ভূভাগ চিহ্নিত করা হয় অন্য রঙে।
বাংলাদেশের ভূখণ্ড মিয়ানমারের মানচিত্রে এভাবে প্রদর্শনের ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয় রাষ্ট্রদূতের কাছে।
“আমরা যখন প্রশ্ন করেছি, তখন তিনি বলেছেন, ভুলক্রমে এটা হতে পারে,” বলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা।
কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে মিয়ানমারের এই তৎপরতাকে খাটো করে দেখছে না বাংলাদেশ।
“রোহিঙ্গা সঙ্কটকে পাশ কাটাতে এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কাজ বলে আমরা মনে করছি, তাই তাকে (রাষ্ট্রদূত) বলা হয়েছে, কীভাবে এমনটা হল তা খুঁজে বের করে জানাতে,” বলেন ওই কর্মকর্তা।
কক্সবাজার সংলগ্ন প্রবাল দ্বীপ সেইন্ট মার্টিন সৃষ্টি থেকে বর্তমান বাংদেশের ভূখণ্ডের অন্তর্গত। ব্রিটিশ শাসনাধীনে ১৯৩৭ সালে যখন বার্মা ও ভারত ভাগ হয়, তখন সেইন্ট মার্টিন ভারতে পড়েছিল।
১৯৪৭ সালে ভারতে ভাগের সময় সেইন্ট মার্টিন পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্ত হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে এটি বাংলাদেশে অন্তর্গত। ১৯৭৪ সালে সেইন্ট মার্টিন দ্বীপপুঞ্জকে বাংলাদেশের ধরে নিয়েই মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা চুক্তি হয়।