গুজব ছড়ানোর মামলায় ১২ শিক্ষার্থী রিমান্ডে
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন চলার সময় গুজব ছড়ানোর অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সেই ১২ শিক্ষার্থীর দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার ঢাকার মহানগর হাকিম নুরুন্নাহার ইয়াসমিনের আদালত রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক নিরু মিয়া আসামিদের আদালতে হাজির করেন সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করলে আদালত প্রত্যেককে দুদিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।
অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন, কামাল হোসেনসহ অনেকেই রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন।
রিমান্ডে যাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- তারেক আজিজ, তারেক, জাহাঙ্গীর আলম, মো. মোজাহিদুল ইসলাম, মো. আল আমিন, জহিরুল ইসলাম, মো. বোরহান উদ্দিন, ইফতেখার আলম, মেহেদী হাসান রাজিব, মো. মাহফুজ, সাইফুল্লাহ ও রায়হানুল আবেদিন।
এরআগে সোমবার দুপুরে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় দায়ের করা দুটি মামলায় ১২ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মো. মাসুদুর রহমান গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রাজধানীর তেজগাঁওয়ের তেজকুনীপাড়া এলাকা থেকে রোববার ১২ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় দায়ের করা দুটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়।
মো. মাসুদুর রহমান দাবি করে বলেন, তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন স্কুল কলেজের মনোগ্রামসহ ১২ সেট ইউনিফর্ম, ১৩টি ফিতাসহ আইডি কার্ড (গ্রেফতার ছাত্ররা কেউই ওইসব স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী নয়), হ্যান্ডমাইক, ম্যাগনিফাইয়িং গ্লাস, হাতুড়ি, স্ক্রু ড্রাইভার, তিনটি ল্যাপটপ, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মপদ্ধতির বিভিন্ন ফর্ম, শিশু-কিশোরদের মাসিক ম্যাগাজিন কিশোর কণ্ঠসহ বিভিন্ন ইসলামি বই, বিভিন্ন কার্যক্রমের বিষয়ে লেখা ডায়েরি ও ফেসবুকে পোস্ট করা বিভিন্ন ভিডিওসহ ছবি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার ছাত্রদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে উপকমিশনার মাসুদুর রহমান বলেন, তারা গত ২৯ আগস্ট শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ও নিরাপদ সড়কের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত বিভিন্ন উসকানিমূলক লেখা,পোস্ট,ফটো ও ভিডিওর মাধ্যমে গুজব ছড়ায়।
এর আগে রোববার দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে ওইসব ছাত্রের অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে ১২ জন ছাত্রকে ৪ দিন ধরে অন্যায়ভাবে আটক রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। অথচ তাদের আটক বা গ্রেফতারের বিষয়টি স্বীকার করা হচ্ছে না। এমনকি তাদের আদালতেও সোপর্দ করা হচ্ছে না।।
অভিভাবকরা দাবি করে বলেন, গত ৫ সেপ্টেম্বর রাতে তেজগাঁও-মহাখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে আমাদের সন্তানসহ অনেক ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে ডিবি কার্যালয় থেকে বেশ কয়েকজনকে ছেড়ে দেয়া হলেও আমাদের আরও ১২ সন্তানদের আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে।
ওইদিনই এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি পুলিশের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, সংবাদ সম্মেলনে যারা অভিযোগ করেছেন তাদের অভিযোগ সঠিক নয়। ৫ সেপ্টেম্বর বা ৭ সেপ্টেম্বর আমরা কাউকে গ্রেফতার করিনি। যারা পেশাদার অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেফতারে প্রায়ই অভিযান চালানো হয়। এ ধরনের অভিযান এখনো অব্যাহত আছে।