২৫ বছর ধরে একাই আন্দোলন করে যাচ্ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন
ইলিয়াস কাঞ্চন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে অত্যন্ত সুপরিচিত একজন অভিনেতা। ১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তাঁর স্ত্রী জাহানারার। বিষয়টি মেনে নিতে কষ্ট হয় তাঁর।
১৯৯৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে নিরাপদ সড়ক নিরাপদ জীবন স্লোগানে আন্দোলন শুরু করেন। নিরাপদ সড়ক চাই (নিশচা) আন্দোলন বর্তমান বাংলাদেশে ব্যাপক ভাবে পরিচিতি লাভ করেছে এবং এর সাথে বিভিন্ন মহল একাত্মতা ঘোষণা করেছে।
১৯৮৮ সালে ইলিয়াস কাঞ্চন এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন। ১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন তাঁর প্রথম স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন। নিজের জীবনের মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা এবং স্ত্রীকে হারানোর বেদনা তাঁকে উদ্বুদ্ধ করে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বজন হারানো এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে।
ইলিয়াস কাঞ্চন বর্তমানে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও প্রধান কান্ডারী। ২০১৫ সালের ৪ মে জাতিসংঘের রোড সেফটি ফর আওয়ার চিলড্রেন কর্মসূচিতে অংশ নেন ইলিয়াস কাঞ্চন। রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল, খিলগাঁও, কাকরাইল, উত্তরা ও ধানমন্ডির পাঁচটি স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নিয়ে এই কার্যক্রম চলে। এর স্লোগান- ভবিষ্যতের জন্য নিরাপদ সড়ক চাই। কিন্তু খুব বড় পরিসরে ইলিয়াস কাঞ্চনের সেই আওয়াজ যেন পৌঁছাচ্ছিল না কোথাও। কেননা সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামেনি।
গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় কলেজপড়ুয়া দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। পরের দিন থেকে রাজধানীর সড়ক অবরোধ করে বেপোরোয়া বাস চালকের ফাঁসি, রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল এবং লাইসেন্স ছাড়া চালকদের গাড়ি চালনা বন্ধসহ ৯ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জোরালো কণ্ঠে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ স্লোগানে আন্দোলনে পথে নামে। অথচ এই দাবি নিয়ে গত ২৫ বছর ধরে একাই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে ৯ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের চেয়ারম্যান ও চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।