বুধবার, ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মিয়ানমারের জেনারেলদের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপের আহ্বান ইইউ’র

সেরাকণ্ঠ ডট কম :
ডিসেম্বর ১৫, ২০১৭
news-image

রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর অবিলম্বে নির্যাতন বন্ধ এবং রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে একটি রেজ্যুলেশন গৃহীত হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই রেজ্যুলেশন গৃহীত হয়।

ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্যরা রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ ছাড়াও অবাধ মানবাধিকার সহায়তার নিশ্চয়তা ও ইইউভূক্ত দেশগুলোকে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার সুপারিশ করেছে। পাশাপাশি সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে আহ্বান জানানো হয়েছে মিয়ানমারের সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর যেসব সদস্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে টার্গেটেড শাস্তিমূলক অবরোধ আরোপ করার।

প্রসঙ্গত যে, মিয়ানমারের প্রকৃত ক্ষমতা সামরিক বাহিনীর হাতে এবং এর প্রধান হচ্ছে জেনারেল মিং আং হ্লাইং। সামরিক বাহিনীর নির্দেশেই রাখাইনে অপারেশন ক্লিয়ারেন্স পরিচালিত হচ্ছে।

রেজ্যুলেশনে একই সঙ্গে ইউরোপিয়ান কমিশনকে আহ্বান জানানো হয়, মিয়ানমার যেসব বাণিজ্য সুবিধা ভোগ করে সেগুলির বিষয়ে ওই সংস্থা যেন তদন্ত শুরু করে এবং রোহিঙ্গা ইস্যুসহ অন্যান্য মানবাধিকার সংলাপ জোরদার করে। রোহিঙ্গাদের প্রতি নির্যাতন বন্ধ এবং একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য চীনসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক শক্তির প্রতি আহ্বান জানানো হয় রেজ্যুলেশনে।

এতে শাখারভ পুরস্কারপ্রাপ্ত অং সান সুচি মনে করিয়ে দেওয়া হয় এই পুরস্কার তাকেই দেওয়া হয় যে মানবাধিকার রক্ষা করবে, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেবে এবং আন্তর্জাতিক আইনকে সম্মান জানাবে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলা হয়, যারা এগুলি পালন করবে না তাদের শাখারভ পুরস্কার ফেরত দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে কিনা। অং সান সুচিসহ মিয়ানমার সরকার যেন সব ধরনের জাতিগত ও ধর্মগত ঘৃণাকে নিন্দা করে এবং রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের সামাজিক বৈষম্য প্রতিরোধে ভূমিকা রাখার কথাও রেজ্যুলেশনে বলা হয়।

নিরাপত্তা পরিষদের এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে রেজ্যুলেশনে বলা হয়, ইইউ সদস্যরাষ্ট্রসমূহ যেন চীন ও রাশিয়াসহ নিরাপত্তা পরিষদের অন্যান্য সদস্যদের ওপর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চাপ অব্যাহত রাখে। এছাড়া মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রি নিষেধাজ্ঞার পরিধি বাড়িয়ে দেওয়ার পক্ষে এ রেজ্যুলেশনে মত প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি নিরাপত্তা পরিষদ যেন এমন পদক্ষেপ নেয় যাতে করে বিশ্বের যেকোনও দেশ যেন মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রি না করে বা সামরিক প্রশিক্ষণ না দিতে পারে।

এ বছরের আগস্ট থেকে ছয় লাখ ৪৬ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে বলে জানানো হয় রেজ্যুলেশনে।

উল্লেখ্য, এ বছরের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর হামলা ও নির্যাতনের ফলে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের পালিয়ে আসে। গত বছরের ৯ অক্টোবর রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন শুরু হলে প্রায় ৯০ হাজারের মতো তখন রোহিঙ্গা পালিয়ে আসে। এর আগে থেকে প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিল।