পাকিস্তান আমলের শুরুর দিকে প্রতাপশালী দল মুসলিম লীগের পরিণতির বিষয়টি বিএনপিকে স্মরণ করিয়ে দিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের। বলেন, বিএনপি আবারও ভোট বর্জন করলে তাদের অবস্থাও মুসলিম লীগের মতোই হবে।
সোমবার সকালে কক্সবাজারের একটি হোটেলে রোহিঙ্গাদের জন্য নগদ অর্থ সহায়তা এবং ওষুধ সামগ্রী গ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক।
এ সময় ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপিকে আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান কাদের। বলেন, বিএনপি না এলেও ভোট আটকে থাকবে না। আর বিএনপির নির্বাচন ঠেকানোর ক্ষমতা নেই সেটা প্রমাণ হয়ে গেছে ২০১৪ সালেই।
কাদের বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপির পরিণতি হবে মুসলিম লীগের চেয়েও ভয়াবহ।’
২০ শতকের শুরুর দিকে অখণ্ড ভারতে প্রতিষ্ঠিত মুসলিম লীগ পাকিস্তান আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর এই দলটিই পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি এই অঞ্চলে প্রাদেশিক সরকারেও ছিল। কিন্তু ১৯৫৪ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্টের কাছে হেরে এবং ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগের কাছে হেরে রাজনীতিকে গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে দলটি। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষে অস্ত্র ধরা দলটি স্বাধীনতার পর নিষিদ্ধ হয়। পরে জিয়াউর রহমানের আমলে আবার রাজনীতি শুরু করলেও দলের একটি অংশ বিএনপিকে বিলীন হয়। আর এখন এই দলটির তৎপরতা থাকলেও তাদের কোনো প্রভাবই নেই রাজনীতিতে।
ওবায়দুল কাদের মনে করেন বিএনপি আবারও নির্বাচন বর্জন করলে তারা কর্মী ধরে রাখতে পারবে না।
আর ভোটে এলেও বিএনপি জিততে পারবে না বলেও মনে করেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, নির্বাচনের বিজয়ের জন্য কথামালার চাতুরি আর স্ট্যান্ডবাজি ছাড়া বিএনপির কোন পুঁজি নেই।
এ সময় রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, প্রায় সাড়ে সাত লাখ মিয়ানমারের নাগরিক উখিয়া ও টেকনাফের সামাজিক জীবনের ওপর ব্যাপক চাপ তৈরি করেছে। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পর্যটন শিল্প, ঝুঁকির মুখে পড়েছে সবুজ পাহাড়ের সৌন্দর্য্য। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা সংকট সৃষ্টি করেছে, তাদেরকেই এর সমাধান করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন কাদের।
পরে সংসদ সদস্য শামসুল হক চৌধুরী ২০ লাখ ও একরামুল করিম চৌধুরীর ২০ লাখ টাকাসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের দেয়া নগদ ৮৩ লাখ ২৬ হাজার টাকা এবং ওষুধ সামগ্রী জেলা প্রশাসক আলী হোসেনের হাতে তুলে দেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, কক্সবাজার আওয়ামী লীগ সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, আবদুর রহমান বদি, আশেক উল্লাহ রফিক প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।