মঙ্গলবার, ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ইতিহাস বিকৃতকারীরা যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে: প্রধানমন্ত্রী

সেরাকণ্ঠ ডট কম :
নভেম্বর ২৫, ২০১৭
news-image

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে আর যেন রাজকার-আলবদর-আলশামস, খুনি ও ইতিহাস বিকৃতকারীরা আর যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে। আগামীর বাংলাদেশ হবে অর্থনৈতিক মুক্তির ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ইউনেসকোর বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আজ শনিবার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আনন্দ শোভাযাত্রা শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত সমাবেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দীর্ঘদিন সাতই মার্চের ভাষণ প্রচার করতে দেওয়া হয়নি। এই ভাষণ এখন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। সত্য ইতিহাস চির ভাস্বর। ইতিহাস কেউ মুছে ফেলতে পারে না।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, এত দূরদর্শী ও এত নির্দেশনা বিশ্বের আর কোনো ভাষণ ভাষণে নেই। এই ভাষণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসহযোগ আন্দোলনের কথা বলেছিলেন, গেরিলা যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলেছিলেন। তিনি জয় বাংলা বলে তাঁর ভাষণ শেষ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু এ দেশের মানুষকে রাজনৈতিক মুক্তি দিয়েছেন, অর্থনৈতিক মুক্তি দেওয়ার পথে হাঁটা শুরু করেছিলেন। দেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু তখনই স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা করা হয়। বাংলাদেশ নামটাও বঙ্গবন্ধুর দেওয়া। তিনি বলেন, সেদিন শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যাই করা হয়নি, তাঁর আদর্শ নষ্ট করে এ দেশে রাজাকার-খুনিদের ক্ষমতায় বসানো হয়েছিল।

বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে স্বীকৃতি দেওয়ার কারণে তিনি ইউনেসকোকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এই স্বীকৃতি যাঁরা স্বাধীনতার জন্য লড়াই-সংগ্রাম করেছেন তাঁদেরও স্বীকৃতি। এই ভাষণে যে কেবল নির্দেশনা ছিল তা–ই নয়, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ কেমন হবে, সেটাও বঙ্গবন্ধু বলেছেন। শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘বিশ্বে এখন আমরা উন্নয়নের রোল মডেল। শিগগিরই এই জাতি অর্থনৈতিক মুক্তি পাবে। ২০২১ সালে এ দেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে, ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধশালী দেশ।’

সমাবেশ উপলক্ষে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছিল লোকে লোকারণ্য। দুপুর থেকে উদ্যানে আসতে থাকেন রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, সরকারি চাকুরে, শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুপুর থেকেই চলে নানা আয়োজন। নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তি উপভোগ করেন আগত অতিথিরা। বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে সরকারি চাকুরেদের সমাবেশে ভাষণ দেবেন।এদিকে রাজধানীর রাসেল স্কয়ার থেকে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে শোভাযাত্রা নিয়ে সরকারি চাকুরেরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যেতে শুরু করেন। তবে এর ঘণ্টাখানেক আগে থেকেই বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আশপাশের সড়কগুলোয় অবস্থান নিতে শুরু করেন। বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের ব্যানারসহ শুক্রাবাদ, ধানমন্ডি ২৭, স্কয়ার হাসপাতালের সামনে থেকে রাসেল স্কয়ারের দিকে যেতে থাকেন। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকেই ঢাকঢোলসহ এসেছেন। তাঁরা নানা রঙের টি-শার্ট পরেছেন। বহন করছেন ব্যানার। আনন্দ শোভাযাত্রায় রাখা হয় হাতিও।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এই আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। মন্ত্রণালয়গুলো বিভিন্ন অধিদপ্তরকে একই নির্দেশ দিয়েছে।

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেসকো বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। গত ৩১ অক্টোবর এই স্বীকৃতি দেওয়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়।