সৈয়দ আশরাফুলের আসন ঘিরে সমীকরণ
কিশোরগঞ্জ-১ (হোসেনপুর-কিশোরগঞ্জ সদর) আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা নানা কৌশলে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণে সচেষ্ট রয়েছেন। পাশাপাশি পোস্টারিং, ব্যানার, মোবাইল মেসেজ এবং ফেসবুকের মাধ্যমে শুভেচ্ছা বিনিময় ও দোয়া কামনা করছেন। একই সাথে তারা মনোনয়নলাভের আশায় কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। আবার অনেকে বিয়ে, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভোটারদের মন জয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
এ আসনটির রয়েছে রাজনৈতিক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সাবেক পাটমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন ছাড়াও ঐতিহাসিকভাবে ইশাখাঁ-মানসিংহ, সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ, আব্দুর রহিম মুন্সি, নীলকুটি, জমিদার বাড়িসহ বহু রূপকথার স্মৃতিবিজড়িত এবং লোকসাহিত্যের তীর্থস্থান এই হোসেনপুর ও কিশোরগঞ্জ।
স্বাধীনতার পর এ আসনটি বেশির ভাগ সময় আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। সর্বশেষ ১৯৯১ সালে বিএনপি এ আসনে জয়লাভ করলেও পরবর্তীকালে আবার আওয়ামী লীগের দখলে চলে যায়। তাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি চায় হারানো আসন ফিরে পেতে আর আওয়ামী লীগ চায় ধরে রাখতে। ফলে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে দুই দলই এখন কৌশলী ভূমিকায়।
এই আসনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম থাকলেও গুঞ্জন রয়েছে, যদি তিনি আরো ভালো অবস্থানে চলে যান কিংবা অন্য কোনো আসন থেকে নির্বাচন করেন, তবে এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তারা হলেন- সৈয়দ আশরাফের ভাই সাবেক সেনাকর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) সাফায়াত, আ’লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও কৃষি ব্যাংকের সাবেক পরিচালক কৃষিবিদ মশিউর রহমান হুমায়ুন, তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম শামসুল হক গোলাপ মিয়ার ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা এ কে এম দিদারুল হক।
অন্য দিকে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন- সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ হেলালি, কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও গুরুদয়াল সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, সাবেক জজ রেজাউল করিম চুন্নু, হোসেনপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিল্পপতি জহিরুল ইসলাম মবিন, দেশনেত্রী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জিয়া হলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাবেক সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মনিরুল হক রাজন, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিউল্লাহ রব্বানি, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী ইসরাঈল, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন- কেন্দ্রীয় নেতা আবু সাইদ খুররম ও মো: মোস্তাইন বিল্লাহ।
বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বিপরীতে আসনটি পুনরুদ্ধারে কেন্দ্র থেকে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা, ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক ডেপুটি মেয়র মো: আব্দুস সালাম কিংবা জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আফরোজা আব্বাসের মনোনয়নের বিষয়টিও শোনা যাচ্ছে তৃণমূলে।