১৭৬টি গ্রাম রোহিঙ্গাশূন্য করা হয়েছে: মিয়ানমার
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ১৭৬টি গ্রাম এখন জনমানবশূন্য। সেনাবাহিনীর চলমান অভিযানে গ্রামগুলো থেকে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গারা পালিয়ে গেছে। মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট দপ্তরের মুখপাত্র জ হতয় এক বিবৃতেত এসব তথ্য জানিয়েছেন। খবর: দ্য গার্ডিয়ানের। জ হতয় বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যের তিনটি শহরতলী এলাকায় সর্বমোট ৪৭১টি গ্রাম রয়েছে। এসব গ্রামকে লক্ষ্য করে সেনাবাহিনী অভিযান চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে ১৭৬টি বা ৪০ শতাংশ গ্রাম থেকে সবাইকে তাড়িয়ে দিয়েছে সেনারা। সেগুলো এখন জনমানবশূন্য।’
তিনি বলেন, ‘অন্য ৩৪টি গ্রাম থেকেও কিছু কিছু রোহিঙ্গা পালিয়েছে। সেগুলোর দখল নেওয়া হচ্ছে। এসব গ্রামের মানুষেরা দেশ ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছে।’
তবে বিবৃতিতে রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার করেননি জ হতয়।
তীব্র সমালোচনার মুখে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি যাচ্ছেন না বলে জানা গেছে।
এরই মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট দপ্তরের মুখপাত্র রোহিঙ্গাদের গ্রামশূন্য করার তথ্য দিয়ে বললেন, ‘সু চি সম্ভবত জাতিসংঘের অধিবেশন এড়াতে চাচ্ছেন।’
গত ২৫ আগস্ট রাখাইনের অন্তত ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনাক্যাম্পে রোহিঙ্গা যোদ্ধারা প্রবেশের চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়।
ইতোমধ্যে এই সংঘর্ষে ৩ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
আর জাতিসংঘের তথ্যে, প্রাণ বাঁচাতে রাখাইন থেকে এখন পর্যন্ত পালিয়ে ৩ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
বাংলাদেশ এসব রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
তবে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘পালিয়ে যাওয়া বাসিন্দারা মিয়ানমারে ফিরতে চাইলে অবশ্যই সবাইকে ফিরে আসার অনুমতি দেওয়া হবে না। যাচাই-বাছাই করতে হবে। এরপরই মিয়ানমার কেবল তাদের গ্রহণ করতে পারে।’
রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দেওয়ার পেছনে তিনটি কারণও উল্লেখ করেন জ হতয়।
তিনি বলেন, ‘প্রথমত, অবশ্যই রাখাইনের সন্ত্রাসী হামলা। দ্বিতীয়ত, সেখানকার মানুষেরা আরও অন্য এলাকায় বিদ্রোহ বাড়াচ্ছিল। আর তৃতীয়ত, আমরা রাখাইনে সন্ত্রাসী হামলার শিকার। এজন্য যারা চলে যাচ্ছে, তাদের সন্ত্রাসী হিসেবেই দেখছি। সেভাবেই ইস্যুটিকে মোকাবেলার চেষ্টা করছি।’