বিচারপতি মানিকও স্পিকারের জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন : তোফায়েল
আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের আদালতে ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘তিনিও (বিচারপতি মানিক) আদালতে সংসদকে নিয়ে অনেক বক্তব্য দিয়েছেন। সংসদকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। তিনি সে সময় আদালতে বসে স্পিকারের জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সে সময় সংসদে তাঁর এই কথা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। সংসদ সদস্যরা তাঁর বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছিলেন এবং আলোচনা করেছিলেন।’
আজ রোববার সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
এর আগে গতকাল শনিবার এক আলোচনা সভায় সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার উদ্দেশে বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা, তুমি শুধু প্রধান বিচারপতির পদ ছাড়বা না, এই দেশ ছাড়তে হবে। এ দেশে থাকার কোনো অধিকার তোমার নাই।’
এ বিষয়টি উল্লেখ করে আজ একজন সাংবাদিক বাণিজ্যমন্ত্রীর মন্তব্য জানতে চান। জবাবে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিচারপতি মানিকের এই কথার বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। তিনি নিজেও সংসদকে নিয়ে অনেক কথা বলেছেন।’
২০১২ সালের ২৯ মে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে স্পিকার ও একজন সংসদ সদস্য বক্তব্য দেন। ওই বক্তব্য নিয়ে ওই বছর ৫ জুন হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক সড়ক ভবন-সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে সংসদে দেওয়া স্পিকারের ওই বক্তব্যের বিষয়ে আদালতে মন্তব্য করেন। ওই দিনই সংসদের অধিবেশনে বিচারপতির ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন কয়েকজন সংসদ সদস্য এবং সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করে বিচারপতি মানিকের অপসারণ দাবি করেন। এর ধারাবাহিকতায় ১৮ জুন স্পিকার আবদুল হামিদ সংসদে রুলিং দেন। সেখানে এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতিকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
এদিকে অন্য এক প্রশ্নের জবাবে আজ বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে রয়েছে বিশ্বে এর নজিরই বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে সিনেট অনেক শক্তিশালী। দেশটির সংসদ বিল ক্লিনটনকেও অভিশংসনের উদ্যোগ নিয়েছিল। একজন প্রেসিডেন্টকে যদি পার্লামেন্ট অভিশংসন করতে পারে, তাহলে বিচারপতিকে কেন পারবে না—সে প্রশ্নও রাখেন তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে সংসদই শক্তিশালী। এ সময় তিনি কানাডা, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশের সংসদের কার্যকারিতার কথা উল্লেখ করেন।
তোফায়েল আহমেদ আরো বলেন, ‘সামনে আমাদের সংসদ অধিবেশন রয়েছে। সংসদে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।’
এ সময় জানতে চাওয়া হয় যে, অনেক মন্ত্রী এবং সরকারি দলের নেতা প্রধান বিচারপতির অপসারণ দাবি করছেন। বাণিজ্যমন্ত্রীও তাই চান কি-না?
জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি এ প্রশ্নের কোনো জবাব দেবো না। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আইনমন্ত্রী রয়েছেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে রাজনীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। আমরা সেগুলোকেই তুলে আনছি।’