বিচারপতি তোমার বিচার করবে জনতা: হানিফ
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলে সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় নিয়ে চলমান বিতর্কের বিষয়ে প্রধান বিচারপতির উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, সরকারকে আপনি হুমকি দিচ্ছেন। এটা স্বাধীন বাংলাদেশ, পাকিস্তান নয়। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানকে পরাজিত করে আমরা এদেশ স্বাধীন করেছি। বাঙালি বীরের জাতি আমাদেরকে হুমকি দিয়ে কোন লাভ নেই। দেশের জনগণ যদি একবার জেগে যায়, তাহলে অনেকে পালাবার পথ খুঁজে পাবেন না। এখন জনগণের মধ্যে কথা উঠেছে, বিচারপতি তোমার বিচার করবে, এবার এই জনতা।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গণি রোডের বিদ্যুৎ ভবনের মুক্তি হলে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। জাতীয় বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগ (সিবিএ) আলোচনা সভায় আয়োজন করে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের উদ্দেশ্যে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার চলছে। এই হত্যকান্ডের সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা জড়িত। কান্নাকাটির কি দেখেছেন আপনারা? কান্নাকাটি এতদিন জাতি করেছে! এবার আপনাদের কাঁদতে হবে, সামনে অপেক্ষা করুন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামালার নৃশংসতা তুলে ধরে ঘটনায় জড়িত এবং চক্রান্তকারীদের দ্রুত বিচার সম্পন্ন দন্ড কার্যকর করার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন হানিফ।
‘১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্ট’ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বক্তব্যের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ নেতা হানিফ বলেন, গতকাল তিনি বললেন, ‘১৫ আগস্ট এবং ২১ আগস্টের মতো ঘটনা ঘটতেই পারে। এটা নিয়ে এতো কান্নাকাটির কি আছে?’ অবাক হয়ে যাই, এটা রাজনীতি, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের কথা।
হানিফ আরও বলেন, ১৫ আগস্টের বর্বর হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল বলেই এরা বারবার এই হত্যকান্ডের বিচার বন্ধ করে দিয়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলাও বিএনপি-জামায়াত সরকারের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হয়েছিল। নিজেদের অপরাধকে ধাপাচাপা দেওয়ার জন্য এখন বলছেন, কান্নাকাটির কিছু নাই। আপনারা কান্নাকাটির কি দেখেছেন? ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার তদন্ত হয়েছে, এখন বিচার চলছে। এই হত্যকান্ডের সঙ্গে আপনার শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা জড়িত। হত্যকান্ডের সঙ্গে জড়িত সেই মুফফি হান্নান সাক্ষ্য দিয়েছেন। আপনাদের নেতা তারেক রহমান হাওয়া ভবনে বসে, একাধিকবার হত্যাকারীদের নিয়ে গ্রেনেড হামলার ষড়যন্ত্র করেছিল।
“এখন ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বলছেন, এটাকে নিয়ে এতো কান্নাকাটি করার কি আছে” উল্লেখ করে হানিফ মোশারফের উদ্দেশে বলেন, কান্নাকাটি এতোদিন জাতি করেছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্য কেঁদেছে। এরপরে আপনাদের কাঁদতে হবে। এই হত্যাকান্ডের ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে আদালতের রায়ে দন্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পরে। আপনি কান্নাকাটির কি দেখেছেন? সামনে কান্নাকাটির জন্য অপেক্ষা করুন !
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি জহিরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চোধুরী নওফেল, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ প্রমুখ।