রবিবার, ৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নতুন ‘ষড়যন্ত্রে’ বিএনপি, সতর্ক থাকার আহ্বান কাদেরের

সেরাকণ্ঠ ডট কম :
আগস্ট ১২, ২০১৭
news-image

ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার রায় নিয়ে বিএনপি নতুন করে ষড়যন্ত্রের জাল পুঁতেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এই ষড়যন্ত্র নিয়ে সতর্ক থাকতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক ছাত্র সমাবেশে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। জাতীয় শোক দিবসকে সামনে রেখে ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ শাখা এই সমাবেশের আয়োজন করে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকে যারা শেখ হাসিনার উন্নয়নকে সহ্য করতে পারছে না, তারা সুপ্রিম কোর্টের রায়কে কেন্দ্র করে নতুন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। এ ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে সাংগঠনিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।’

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা আন্দোলন করতে গিয়ে ব্যর্থ, নির্বাচনে হেরে যাবে বলে তারা অংশ নেয়নি। তারা আন্দোলন করতে ব্যর্থ হয়ে ষড়যন্ত্রের জাল পেতেছে। সরকার হটাতে নতুন নতুন ইস্যু খুঁজে বেড়াচ্ছে।

‘আমাদের কঠিন চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে। এই ষড়যন্ত্রের খুঁটি কোথায় কোথায় আছে, তা আমরা জানি।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ কখনও পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। বিএনপির জন্ম হয়েছে বন্দুকের নল দিয়ে। অন্ধকার আর ষড়যন্ত্রের পথ দিয়েই তারা এগিয়ে যাচ্ছে। সেভাবেই ২০০১-এর ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচন করেছিল, আবার মনে করছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর সেই ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচন হবে। কিন্তু সেই রঙিন খোয়াব কর্পুরের মতো উড়ে যাবে।’

‘মওদুদের কথায় লাফাবেন না’

বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদকে ‘ডিগবাজির চ্যাম্পিয়ন’ আখ্যা দিয়ে কাদের বলেন, তার কথায় বিএনপি লাফালাফি করছে। মওদুদের কথা শুনলে বিএনপি আরও ডুবে যাবে বলেও মনে করেন তিনি।

‘মওদুদ আহমেদ যখন আদালতের রায়ে তার দখলকৃত বাড়িটি হারালেন, তখন বললেন বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। আবার যখন সুপ্রিম কোর্ট ষোড়শ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করল তখন বললেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন। এটা তার দুমোখো আচরণ যা বানরের সংগীত গাওয়ার মত।’

বিএনপির উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘আপনারা এমনিতেই অর্ধেক ডুবে গেছেন। আর যদি মওদুদের কথায় লাফালাফি করেন ও তার পরামর্শ শোনেন তাহলে বাকি অর্ধেকও ডুবে যাবেন।’

‘এই মওদুদ সাহেব জিয়াউর রহমানের সরকার থেকে পদত্যাগ করেছিলেন, ভুলে গেছেন বিএনপির লোকেরা? বন্যার্দুগত এলাকায় যাওয়ার সময় চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত বেগম জিয়া যখন কুমিল্লা হাসপাতালে, তখন মওদুদ সাহেব তাকে হাসপাতালে রেখে এরশাদ সরকারে যোগ দিয়েছেন। এই মওদুদ সাহেব একবার বিএনপি, একবার জাতীয় পার্টি, আবার বিএনপি। কী করে তার পরার্মশ নেন খালেদা জিয়া?’

জনগণ বিএনপির সঙ্গে নেই

বিএনপি আট বছরে আট মিনিটের জন্যও আন্দোলন করতে পারেনি বলেও মন্তব্য করেন কাদের। বলেন, ‘পারেননি কারণ, জনগণ আপনাদের সঙ্গে ছিল না। এতদিন যারা আন্দোলনের ডাক দিয়ে ঘরে বসে হিন্দি সিরিয়াল দেখে দেখে তাদের সময় কাটত, এখন ঘর থেকে বেরিয়ে এসে এসে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠছে, যেন আদালত তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। এরা এতদিন বিদেশিদের কাছে নালিশ করেছে, যেন বিদেশিরা তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে।’

খারাপদেরকে ছাত্রলীগ থেকে বের করে দাও

দল ভারী করতে খারাপ লোক না নিতে ছাত্রলীগের প্রতি আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। বলেন, খারাপদেরকে সংগঠন থেকে বের করে দিতে।

‘অনুপ্রবেশকারীদের ছাত্রলীগে স্থান নেই। আগাছামুক্ত, পরগাছামুক্ত ছাত্রলীগ গড়তে হবে। গুটি কয়েক খারাপ লোকের জন্য ছাত্রলীগের দুর্নাম হতে পারে না। খারাপদেরকে বের করে দাও। এদের আমাদের প্রয়োজন নেই।’

বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার প্রধান আসামি রাজনের সমালোচনা করে কাদের বলেন, ‘তার মত ছাত্রলীগের কর্মী আমাদের দরকার নেই। তার মত গুটিকয়েক নেতাকর্মীর কারণে আমাদের দলের সম্মান বিনষ্ট হয়েছে।’

‘সিদ্দিকুরের পাশে থাকব’

পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের শেলে চোখ হারা তরুণ সিদ্দিকুরকে নিয়েও কথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। বলেন, ‘বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েও আমরা সিদ্দিকুরের চোখের আলো আমরা ফেরাতে পারিনি। তার চোখের আলো আজীবনের জন্য নিভে গেছে। কিন্তু আমরা তার পরিবারের সঙ্গে আছি। আমরা সিদ্দিকুরের পরিবারের সঙ্গে থাকব।’

ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব সাইফুজ্জামান শিখর, ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন প্রমুখ।