বৃহস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

টঙ্গী সরকারি কলেজের ছাত্রলীগ সভাপতির কাণ্ড

সেরাকণ্ঠ ডট কম :
আগস্ট ১, ২০১৭
news-image

ঘটনাস্থল গাজীপুরের টঙ্গী সরকারি কলেজ। ক্যাম্পাসের একটি গাছ থেকে ‘আমরুজ পেড়ে খাওয়া’র অভিযোগে এক ছাত্রীকে পিটিয়েছেন ওই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী মঞ্জুর। ওই ছাত্রীর নাম লাইজু। তার অভিযোগ, তাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে চড়-থাপ্পড় ও লাথি মারা হয়। শুধু মঞ্জুরই নন, তার সহযোগীরাও মারধর করেন। ঘটনার শিকার লাইজু থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে ঘটনার পর নিজেকে বাঁচাতে ওই ছাত্রলীগ নেতা দাবি করেছেন, তরুণীর সঙ্গে ‘আপসরফা’ হয়ে গেছে। উল্লেখ্য, লাইজু নিজেও ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মী লাইজুকে রোজার ঈদের কয়েক দিন আগে মারধর করার ঘটনাটি ঘটে। এটি সে সময় মোবাইল ফোনে ধারণ করেছিলেন প্রত্যক্ষদর্শী কোনো শিক্ষার্থী। ধারণকৃত ভিডিওচিত্রের একটি কপি এসেছে আমাদের সময়ের হাতে। এতে দেখা যায়, লাইজুকে মারপিট করা হচ্ছে। এর পর কান্নাজড়িত কণ্ঠে লাইজু বলছেন, কলেজ ক্যাম্পাসের একটি গাছ থেকে ফল পেড়ে খাওয়ার পর আমাকে ডেকে আনেন কাজী মঞ্জুর। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, তুই কেন ফল খাবি? জবাবে আমি বলি, অন্য শিক্ষার্থীরা তো কলেজের গাছ থেকে ফল পেড়ে খায়। আমিও এই কলেজের ছাত্রী। তাই আমি খেয়েছি। এ কথা বলার পর কাজী মঞ্জুরের ছেলেরা আমাকে মারতে থাকে। তিনিও আমাকে মেরেছেন। আমাকে চড়-থাপ্পড় ও লাথি মারা হয়। কান্নাজড়িত কণ্ঠে মেয়েটিকে ঘটনার বিচার চাইতে দেখা যায়।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঘটনার পর লাইজু টঙ্গী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এ ছাড়া গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের নেতাদের কাছেও অভিযোগ করেন। ঘটনার বেশ কয়েক দিন পর সমঝোতা করা হয়। সম্প্রতি লাইজুকে গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের উপছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক করা হয়েছে।
গত শনিবার এ বিষয়ে কথা হয় ভিকটিম লাইজুর সঙ্গে। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, আমাকে মারধর করা হয়েছিল। তবে বিষয়টির এক ধরনের সমাধান করেছেন সিনিয়র ভাইরা (মহানগর ছাত্রলীগ নেতারা)। আমাকে কারা নির্যাতন করেছিলেন, সেটি টঙ্গী এলাকার সবাই জানেন।
লাইজুকে মারধরের বিষয়টি স্বীকার করে কাজী মঞ্জুর আমাদের সময়কে বলেন, সে (লাইজু) অন্যায় করেছিল। আমি তাকে থাপ্পড় দিয়ে শাসন করেছি।

এ বিষয়ে জানতে কথা হয় গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম দীপের সঙ্গে। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, লাইজু আমাদের মহানগর ছাত্রলীগের উপছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক। তার সঙ্গে মঞ্জুর কথা কাটাকাটি হয়েছে। মারামারির কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমরা পরে বিষয়টি মিটমাট করে দিয়েছি।
টঙ্গী থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার আমাদের সময়কে বলেন, ছাত্রীকে মারধরের কোনো অভিযোগ নিয়ে কেউ থানায় আসেনি। আমাদের বিষয়টি জানা নেই।

আরও কিছু অন্যায়-অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে কাজী মঞ্জুরের বিরুদ্ধে। মাস দেড়েক আগে টঙ্গী এলাকায় তিনজনকে ইয়াবাসহ আটক করে পুলিশ। ‘তদবির’ করে তাদের ছাড়িয়ে এনেছিলেন কাজী মঞ্জুরÑ এমন অভিযোগ রয়েছে। তবে কোনো ইয়াবা ব্যবসায়ীর সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করে কাজী মঞ্জুর বলেন, আটক ইয়াবা ব্যবসায়ীদের ছাড়িয়ে এনেছি এমন অভিযোগ সঠিক নয়। দৈনিক আমাদের সময়।