নির্বাচন কমিশন তো আর নিরাপত্তা পরিষদ না: ওবায়দুল কাদের

নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে দেড় মাসের মধ্যে একজন নির্বাচন কমিশনারের দ্বিতীয়বারের মতো কমিশনের বৈঠক বর্জনের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এতে আস্থার সঙ্কট হওয়ার কোন কারণ নেই।
তিনি বলেছেন এটি তার মাহবুব তালুকদারের অধিকার, কোন বিষয়ে একমত না হলে তিনি এটি করতেই পারেন। এতে নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা সঙ্কট তৈরি হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তাছাড়া নির্বাচন কমিশন তো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ নয় যে সকলের একমত হতে হবে।
মঙ্গলবার সকালে বনানীতে বিআরটিএ’র নবনির্মিত ভবনের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে গিয়ে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।
দেড় মাস আগে ইভিএম ইস্যুতে সভা বর্জনের পর সোমবার নির্বাচন কমিশনের সভায় বেশ কিছু বিষয়ে একমত হতে না পারা এবং কথা বলার স্বাধীনতা না পাওয়ার অভিযোগে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়ে সভা বর্জন করেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের কাছে প্রশ্ন ছিলো: নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের এমন বর্জনে কমিশনের ওপর আস্থার সংকট তৈরি হলো কি না? পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে বিএনপির দাবি যৌক্তিক প্রমাণ হলো কিনা?
ওবায়দুল কাদের বলেন: মহামান্য রাষ্ট্রপতি যখন সার্চ কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করেন, তখন মাহবুব তালুকদার বিএনপি’র পছন্দে কমিশন এসেছিলেন। আমি শুধু এটুকু মনে করিয়ে দিতে চাই।
নির্বাচন কমিশনকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ না ভাবার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন: নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের সকলে একমত না হলে কোন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। একটি নির্বাচন কমিশন নিরাপত্তা পরিষদ নয়। মেজরিটি একমত হলেই যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের সভা বর্জনকে গণতন্ত্র চর্চার অংশ বলেই মানছেন কাদের।
তিনি বলছেন: এটা গণতন্ত্র, একজনের ভিন্নমত প্রকাশ করার অধিকার আছে। কাজেই একজনের ভিন্নমতের কারণে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবির কোন যৌক্তিকতা নেই বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের সভা বর্জন নির্বাচন কমিশনের কাজের জন্য কোনো বাধা নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নোট অব ডিসেন্টে কী লিখেছেন মাহবুব তালুকদার
মাহবুব তালুকদার সভা বর্জনের আগে নোট অব ডিসেন্টে লিখেছেন: নির্বাচন কমিশন কোনভাবেই আমার অধিকার খর্ব করতে পারে না, বাক স্বাধীনতা ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা আমার সংবিধানপ্রদত্ত মৌলিক অধিকার।
‘এমতাবস্থায় আমি নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নোট অব ডিসেন্ট প্রদান করছি এবং প্রতিবাদ স্বরূপ কমিশন সভা বর্জন করছি।’
তিনি বলেন: কমিশন সভায় তাকে বক্তব্য উপস্থাপন করতে না দেওয়ার বিষয়ে কমিশনারদের ‘অভিন্ন অবস্থান’ তাকে ‘বিস্মিত ও মর্মাহত’ করেছে।
সেসময় তিনি জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত সহ পাঁচদফা সুপারিশ করেন।