বুধবার, ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা কিছুতেই সহ্য করব না

সেরাকণ্ঠ ডট কম :
আগস্ট ২১, ২০১৭
news-image

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার প্রতি ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, সব সহ্য করা যায় কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করলে, আমরা কিছুতেই সহ্য করব না।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে এ সভার আয়োজন করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তানের রায় দেখে কেউ ধমক দেবে- সব সহ্য করা যায় কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করলে এটা আমরা কিছুতেই সহ্য করব না। এক্ষেত্রে জনগণের কাছে বিচার দাবি করে শেখ হাসিনা আরো বলেন, আজকে কেন পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করবে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কেন তুলনা করবে? ওই হুমকি আমাকে দিয়ে লাভ নেই। আমরা আইয়ুব খান দেখেছি, জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া…।

তিনি আরো বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ভোট চুরি করে যে সংসদ সদস্য হয়েছিল তার মধ্যে একজনকে তো খালেদা জিয়া বিচারক বানিয়েছে। কই চিফ জাস্টিস তো তাকে বের করে দেয়নি। খালেদা জিয়া ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোট চুরি করে দেড় মাসও ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। জনগণের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে হয়েছে বাধ্য হয়েছে। কারণ সে ভোট চুরি করেছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে তো আন্দোলন করতে গিয়েছিল, বরং জনগণ উল্টো তাদেরকে জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনের ফলে জনগণই বাধা দিয়ে ঘরে তুলে দিয়েছে।

শেখ হাসিনা দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আরো বলেন, যে পাকিস্তানকে আমরা যুদ্ধ করে হারিয়েছি, যে পাকিস্তান ব্যর্থ রাষ্ট্র, আজকে সেই পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের তুলনা কেন করবে? আমরা আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি, আজকে দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। আওয়ামী ক্ষমতায় আছে বলেই তো করতে পেরেছি।

তিনি আরো বলেন, সংবিধান লঙ্ঘন করে কেউ ক্ষমতায় এলে সেটাই উন্নয়ন হবে? সেটা হবে না এই বাংলাদেশে। সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদে যেটা এখন আছে, কেউ যদি অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করে তাহলে তার বিচার হবে।

তিনি আরো বলেন, জনগণের আদালতের বিচারই বড় বিচার, সেটাও চিন্তা করতে বলব। ২১ আগস্ট হত্যার চেষ্টা হয়েছে। একবার না বারবার এবং এখনো প্রতি মুহূর্তে থ্রেট আছে। জীবন দেওয়ার মালিক আল্লাহ, নেবার মালিকও আল্লাহ। মাথা নত করে আল্লাহর কাছে সেজদা দেই। আর কারো কাছে মাথা নত করি না।

এই দেশ আমার বাবা স্বাধীন করে দিয়ে গেছে। এদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করা, এটাই হচ্ছে আমার লক্ষ্য। আমরা প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছি। প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান যেন ভালভাবে চলতে পারে, সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি। স্বাধীনভাবে চলতে পারে সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

প্রধান বিচারপতির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতা ভাল, তবে তা বালকের জন্য নয় বলে একটা কথা আছে। কাজেই ওই বালকসুলভ আচরণ, এটা আমরা আশা করি না। আমরা চাই, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা থাকুক। আর সেই ধারাবাহিকতা থাকবে আওয়ামী লীগ থাকলে, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি থাকলেও। ওই রাজাকার, আলবদর, শান্তি কমিটির মেম্বার, এরা ক্ষমতায় এলে এদেশে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা কোনোদিন ছিল না, থাকবেও না। ২১ বছর এদেশের মানুষ সেই কষ্ট ভোগ করেছে। পুনরায় এই দেশের মানুষ সেই কষ্ট ভোগ করুক তা আমরা চাই না।

জনগণের অধিকার সংরক্ষণ করা, জনগণের ভাগ্য উন্নয়ন করে তাদের একটা উন্নত মর্যাদাশীল জীবন দেওয়া এটাই আমাদের লক্ষ্য।বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ একটা মর্যাদা ও সম্মান পেয়েছে। বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নের রোল মডেল। কাজেই বাংলাদেশের উন্নয়নের এই গতিধারা অবশ্যই অব্যাহত থাকবে।