শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৩০,০০০ রোহিঙ্গা ঢুকেছে, ৪১২ জন হিন্দু সম্প্রদায়ের

সেরাকণ্ঠ ডট কম :
সেপ্টেম্বর ১, ২০১৭
news-image

রাখাইনে চলমান সহিংসতা থেকে প্রাণে বাঁচতে ৩০ হাজারের বেশি মিয়ানমার নাগরিক বাংলাদেশে ঢুকেছেন বলে ধারণা দিয়েছে জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।

এদিকে স্থানীয় সূত্রগুলোর বরাতে বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, এবারে কেবল রোহিঙ্গা মুসলমান নয়, রাখাইনে আক্রান্ত হচ্ছেন হিন্দুরাও।

রাখাইন রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে আসা ৪১২ জন হিন্দু নারী-পুরুষ-শিশু কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবির থেকে দুই কিলোমিটার দূরে পশ্চিম হিন্দুপাড়ার একটি মুরগির খামারে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁরা সবাই রাখাইনের মংডুর ফকিরাবাজার গ্রামের বাসিন্দা। নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অবস্থান করছেন আরও দুই শতাধিক হিন্দু। তাঁরাও বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় আছেন।

রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের কোয়াছং হিন্দুপাড়া থেকে স্ত্রী ও চার ছেলেমেয়ে নিয়ে পালিয়ে আসা স্বর্ণকার দীজেন্দ্র শর্মা বলেন, গত ছয়-সাত দিনে ফকিরাবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় গুলি ও আগুনে পুড়ে ৮৬ জন হিন্দুর মৃত্যু হয়েছে।

ফকিরা বাজার থেকে পালিয়ে আসা মিলন মল্লিক বলেন, রোহিঙ্গা মুসলমানদের সঙ্গে তাঁদের (হিন্দুদের) কোনো বিরোধ নেই। অতীতে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কোনো দাঙ্গাহাঙ্গামাও হয়নি। গত বছরের ৯ অক্টোবর রাখাইন রাজ্যে তিনটি সীমান্তচৌকিতে হামলার পর টানা তিন মাস রাখাইন রাজ্যে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালায় সেনা ও পুলিশ। এ সময় কয়েক শ রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়। ধর্ষণের শিকার হন বহু রোহিঙ্গা নারী। এ সময় ৯০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা রাখাইন রাজ্য ত্যাগ করে বাংলাদেশ আশ্রয় নিলেও তখন কোনো হিন্দু পরিবার দেশ ত্যাগ করেনি। কিন্তু এবার একযোগে সীমান্তচৌকিতে হামলার জন্য হিন্দুদেরও সন্দেহ করছে মিয়ানমার। তাই এত অত্যাচার-নির্যাতন। উদ্দেশ্য রাখাইন রাজ্য ত্যাগ করা।

এ পর্যন্ত ৭০ টি পরিবারের ৪১২জন হিন্দু রাখাইন থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন । কুতুপালং এর হিন্দুপাড়ায় তারা আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে ৮টি হিন্দু পরিবার তাদের ৬২ জন স্বজন নিহত হওয়ার কথা জানা গেছে। ওই হিন্দু পরিবারের বেঁচে ফেরা ১৬ জন নারী শিশুর কক্সবাজার এলাকায় তাদের নিকট আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের দাবি শতাধিক হিন্দু পরিবার এখনও সীমান্তের ‘নো ম্যান্স ল্যান্ডে’ অবস্থান করছে। তাদের বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলেও দাবি ওই সব পরিবারের।