শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পাঠকপ্রিয়তার শীর্ষে হ্যাপীর বই ‘হ্যাপী থেকে আমাতুল্লাহ’

সেরাকণ্ঠ ডট কম :
জুলাই ১, ২০১৭
news-image

এটি হ্যাপীর কোন মিউজিক ভিডিও নয়, নয় কোন চলচ্চিত্রও। তবুও জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে এসেছে হ্যাপির জীবনধর্মী বই ‘হ্যাপী থেকে আমাতুল্লাহ’। গতকাল শনিবার বইটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই একদিনেই পাঠক চাহিদা হাজার ছাড়িয়ে গেছে এমনটাই জানালেন বইটির প্রকাশক মাওলানা উবায়েদুল্লাহ।

একসময়ের আলোচিত চিত্র নায়িকা নাজনীন আক্তার হ্যাপীর বর্তমান সংস্করণ নাম আমাতুল্লাহ। সংস্কার হয়েছে তার জীবনবাঁকেও। জীবনের এমন সংস্কারের গল্পই বলে গেছেন নাজনীন আক্তার হ্যাপী। জীবনের কালো অধ্যায় থেকে কীভাবে আলোর পথে ফিরে এলেন এমন গল্পই বলে গেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারধর্মী বইটির লেখক সাদিকা সুলতানা সাকী।
কী আছে ‘হ্যাপি থেকে আমাতুল্লাহ’ বইটিতে? এমন প্রশ্নের উত্তর পেতে বইটির ‘সম্পাদকের কথায়’ বলা হয়েছে, ‘নাজনীন আক্তার হ্যাপি। এই তো কিছু দিন আগেও তিনি ছিলেন সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা। অর্থ, গ্ল্যামার, জনপ্রিয়তা, শোবিজ জগতে অবস্থান- সবই ছিলো তাঁর। কিন্তু সে-সব ছেড়ে এখন তিনি আপদমস্তক পর্দাবৃত দ্বীনদার মুসলিম নারী। সিনেমার কৃত্রিম নিয়ন আলোর জগত ছেড়ে চলে এসেছেন হিদায়াতের আলোকিত ভুবনে। পড়াশুনা করছেন মাদরাসায়। যাচ্ছেন দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনতে। নিজে যেমন দ্বীনের ওপর উঠে এসেছেন, তেমনই অন্যকেও দ্বীনের পথে ডেকে যাচ্ছেন নিরন্তর। এমনকি এতোদিনের সুপরিচিত নাম ‘হ্যাপি’ ছেড়ে এখন তিনি নিজের পরিচয় দিচ্ছেন ‘আমাতুল্লাহ’। কীভাবে হলো এতো বড় পরিবর্তন? তাঁর জীবনে আলোর এমন উদ্ভাসিত ঝলক কোত্থেকে এলো? কীভাবে তিনি ‘হ্যাপি’ থেকে ‘আমাতুল্লাহ’ হলেন? সেলুলয়েডের তীব্র আকর্ষণ উপেক্ষা করে কীভাবে তিনি চলে এলেন মাদরাসার অন্দরমহলে? তাঁর হিদায়াতের রাজপথে উঠে আসার সরু পথ কি ফুলের মতো কোমল ছিলো? না-কি তাকে মাড়াতে হয়েছে অবর্ণনীয় কষ্ট, উপেক্ষা ও নির্যাতনের কণ্টকাকীর্ণ পথ। জীবনের এই আকস্মিক পটপরিবর্তনের ক্ষেত্রে তাকে কি শুধু নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়েছে? না-কি লড়তে হয়েছে এতোদিনের চেনা মুখ আর সুপরিচিত স্বজনদের সঙ্গেও? এমন কিছু প্রশ্ন নিয়ে আমরা মুখোমুখি হয়েছিলাম তাঁর সঙ্গে। তিনি আমাদের কাছে বলেছেন তাঁর জীবনের আদ্যোপান্ত। শৈশব, তারুণ্য, দাম্পত্য জীবন থেকে শুরু করে জীবনের সুখ-দুখের কথাগুলো তিনি অকপটে আলোচনা করেছেন। তিনি যেমন তাঁর স্বপ্নের কথা বলেছেন, তেমনই বলেছেন স্বপ্নভঙ্গের ব্যথাভরা অনুভূতির কথাও। সত্যি বলছি, আমাদের সঙ্গে আলাপচারিতার সময় যখন তিনি তাঁর জীবনের সেই বেদনাবিধুর উপাখ্যান বলছিলেন, আমরা আমাদের চোখের অশ্রু ধরে রাখতে পারিনি। হিদায়াতের পথে তাঁর পা পিছলে পড়া, আবার উঠে দাঁড়ানোর সংগ্রামের অশ্রুভেজা কথাগুলো শুনে আমাদের চোখ থেকেও টপটপ অশ্রু ঝরেছে। খুব কষ্টে নিজেদেরকে সামলে নিয়ে সাক্ষাৎকার সম্পন্ন করতে হয়েছে।’
নাজনীন আক্তার হ্যাপীকে নিয়ে বই লেখার প্রয়োজন কেন মনে করলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে সাক্ষাৎকারধর্মী বইটির লেখক সাদিকা সুলতানা সাকী এ প্রতিবেদককে জানান, ‘আমি অনেক দিন ধরে আমাতুল্লাহ (নাজনীন আক্তার হ্যাপী) কে পর্যবেক্ষণ করে আসছি। তাঁর জীবনের দু-দিক লক্ষ্য করছি। দীর্ঘ দিনের পর্যবেক্ষণে মনে হলো, এটি কোনো কাল্পনিক চরিত্র নয়। আমাদের সমাজেরই একটি শক্তিশালী চরিত্র। একজন হ্যাপীর মাঝে আমি আমার আশপাশেরঅনেক বোনের জীবনের প্রতিচ্ছবি দেখেছি।
আমার কাছে মনে হয়েছে, এ সমাজে ‘হ্যাপী’ হওয়াটা খুব সহজ। কিন্তু ‘আমাতুল্লাহ’ হওয়াটা অনেক কঠিন। এই কঠিন কাজটাই আমার বোন ‘আমাতুল্লাহ’ করেছেন। তখন আগ্রহ জন্মালো, কীভাবে তিনি ‘হ্যাপী’ থেকে ‘আমাতুল্লাহ’ হলেন, তা যেমন আমার জানা দরকার, তেমনই অন্যদের জানানো প্রয়োজন। সে প্রয়োজনীয়তা সামনে রেখেই আমি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ হই।
বইটির প্রকাশক মাওলানা ওবায়দুল্লাহ জানান, অনেক ভাল মানের বই ইতোপূর্বে আমরা প্রকাশ করেছি। তবে এ বইটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই এতটা পাঠকপ্রিয়তা পাবে আমাদের ভাবনার বাইরে ছিল। মধ্যপ্রাচ্য, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া থেকেও অর্ডার এসেছে। প্রথমদিনেই ছাপানো সব বই শেষ হয়ে গেছে। যারা ইসলামিক বই পড়তে অভ্যস্ত নয়, তারাও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, বইটির ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
যধঢ়ঢ়ু (২)এ ছাড়া দেশের শীর্ষ কয়েকজন আলেমদের কাছেও তিনি বইটি উপহার হিসাবে পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

এ জাতীয় আরও খবর